মানবদেহ নানা রোগের বসতি। এমন সব ভয়ানক রোগে মানুষ আক্রান্ত হয়, যা কখনো চিন্তাও করেন না। আবার অনেকেই আছেন যারা কিছু কিছু রোগের কথা লজ্জায় কাউকে বলতে পারেন না। যার ফলাফল একসময় আরো ভয়ংকর হয়ে ওঠে।

যৌন রোগে­ আক্রান্ত পুরুষ শারীরিক সম্পর্কের সময় তার সঙ্গীর দেহে এসব রোগ সংক্রমিত করে। এ কারণে এগুলোকে যৌন সংক্রমিত রোগ বলা হয়। বহু সংখ্যক যুবক এই রোগে আক্রান্ত হতে পারে। তবে আমাদের দেশের মানুষ যৌন রোগে আক্রান্ত হলেও বিষয়টি লুকিয়ে রাখে। এমনকি চিকিৎসকের কাছে পর্যন্ত অনেক বিষয় গোপন করেন। যা করা আদৌ উচিত নয়।

এই রোগ পুরুষ বা নারী উভয়েরই হতে পারে। সঠিক সময়ে যৌন রোগের চিকিৎসা না নিয়ে অবহেলা করলে ক্ষতির পরিমাণ বাড়তেই থাকবে। তবে অনেকে এ সমস্যা বুঝতেই পারেন না। তাই সতর্ক থাকতে দেরি না করে চলুন জেনে নেয়া যাক যৌন রোগের লক্ষণ ও প্রতিকারের উপায়-

যৌন রোগের লক্ষণ:

পুরুষের লিঙ্গ থেকে সাদা বা হলদে (হালকা হলুদ) রঙের এক প্রকার পদার্থ নিঃসৃত হয় এবং প্রসাবের সময় ব্যথা হয়। আরো মনে রাখুন-

> যৌন রোগী শারীরিক সম্পর্কের মাধ্যমে সঙ্গীর দেহে রোগ সংক্রমিত করে। এসব রোগ যাদের আছে অনেক সময় তারা তা জানেন না অথবা রোগের প্রতি নজর দেন না।

> একাধিক সঙ্গীর সঙ্গে শারীরিক মিলনে যৌন রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।

> যৌনাঙ্গ যদি প্রতিদিন, বিশেষ করে প্রতিবার শারীরিক সম্পর্কের পর পরিষ্কার করা না হয়, তাহলে যৌন রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

যথা সময়ে চিকিৎসা না হলে যা ঘটতে পারে

> সংক্রমণের চিকিৎসা যদি তাড়াতাড়ি না হয়, তাহলে তা যৌনাঙ্গের বাইরে থেকে ভেতরে প্রবেশ করবে।

> নারীদের জরায়ু টিউব ও ডিম্ব কোষ এবং পুরুষের বেলায় অণ্ডকোষ আক্রান্ত হয়।

> নারীরা প্রথম দিকে সাংঘাতিক অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন। পরবর্তীতে বন্ধ্যাত্ব, বারবার বাচ্চা নষ্ট হওয়া অথবা মৃত বাচ্চা প্রসব হতে পারে।

> পুরুষেরা সন্তান জন্মদানের ক্ষমতা হারিয়ে ফেলতে পারেন।

> আক্রান্ত পুরুষ অথবা নারীর সঙ্গীর মধ্যে রোগ ছড়িয়ে পড়বে।

> প্রসূতি নারীর যৌন রোগের চিকিৎসা না হলে বাচ্চাও যৌন রোগ নিয়ে জন্মগ্রহণ করতে পারে।

যৌন রোগ প্রতিরোধ:

যৌন রোগ প্রতিকারের জন্য যৌবনের শুরুতেই রোগের কারণ ও মারাত্মক পরিণতি সম্পর্কে জানা ও সচেতন হওয়া দরকার। আরো যা যা করতে হবে-

> কনডমের সঠিক ব্যবহার অনেক ক্ষেত্রে যৌনরোগ প্রতিরোধ করে।

> একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক এড়িয়ে চলতে হবে। এছাড়া শারীরিক সম্পর্কের পর যৌনাঙ্গ ধুয়ে পরিষ্কার রাখতে হবে।

> রোগীর যৌন সঙ্গীর চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে, যাতে এ রোগ অন্যদের মধ্যে না ছড়ায়। প্রয়োজনে কনডম ব্যবহার করতে হবে।

> কেউ যদি মনে করে তার যৌন রোগ আছে তাহলে যত দ্রুত সম্ভব পরীক্ষা এবং চিকিৎসা করানো উচিত। শুরুতে যৌন রোগের চিকিৎসা করা সহজ, পরে চিকিৎসা করা কঠিন।

চিকিৎসা:

পুরুষ বা নারী যেই হোক না কেন যৌন রোগের কোনো প্রকার লক্ষণ প্রকাশ পাওয়া মাত্রই হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা গ্রহণ করা উচিত। অনেকেই অ্যালোপ্যাথি অর্থাৎ উচ্চশক্তির অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে চিকিৎসা শুরু করেন। এক্ষেত্রে হোমিও ওষুধ বেশি কার্যকর ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন যা অঙ্কুরেই রোগের বীজকে বিনষ্ট করে দেয়।

তবে কেউ যেন কোনো প্রকার যৌন রোগে আক্রান্ত না হয় সেদিকে বিশেষ নজর দেয়া উচিত। বন্ধুবান্ধব কেউ আক্রান্ত হলে তাৎক্ষণিক কোনো সংকোচ না করে চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দেয়া উচিত।